অপেক্ষা: আমার প্রথম গল্পের বই।
লিখেছেন লিখেছেন মামুন ০৪ ডিসেম্বর, ২০১৫, ০৮:০৩:২৯ রাত
আমি অনেক অপেক্ষা করেছি।
চুয়াল্লিশটি বছর কেটে গেছে আমার। একটু একটু করে অপেক্ষার ক্লান্তিকর প্রহরগুলো বিষাদের বিবর্ণতায় আমাকে ফ্যাকাশে করেছে।
অপেক্ষা শেষ হল বুঝি। একটি গল্পের বই বের করতে আমার এতোগুলি বছর লেগে গেল!
কুঁড়েঘর প্রকাশনী থেকে এবারের বইমেলায় আমার এই গল্পের বইটি ইনশা আল্লাহ বের হতে যাচ্ছে। প্রচ্ছদ ফাইনাল করেছি শামিম রহমান আবির ভাইয়ের সাথে। মোট চৌদ্দটি গল্প থাকছে বইটিতে। অনুভূতিগুলো শেষ পর্যন্ত অক্ষরে রুপ নিতে যাচ্ছে!
অক্ষরের প্রতি ভালোবাসা আমার সেই ছেলেবেলায়- হাতেখড়ির আনুষ্ঠানিক দক্ষ-যজ্ঞের মাধ্যমে। আমার জ্ঞানী বাবু কল্পনাও করতে পারবেনা- ওর বাবার সেই দিনটির কথা। আমি টোল এবং পণ্ডিত মশাইকে পেয়েছিলাম। আমার নানাবাড়ি পিরোজপুরের শ্রীরামকাঠী গ্রামের সেই টোলে ( আমার প্রথম উপন্যাস 'নাইয়র' এ আমি এই টোলের কিছু বর্ণনা দিতে চেষ্টা করেছি। উপন্যাসটি এই গ্রামকে কেন্দ্র করেই) আমি চিকন- লম্বা তালপাতার খাতা নিয়ে হাজির হয়েছিলাম। ছোট্ট একটি হোগলার (আঞ্চলিক নাম) মাদুর, মাথায় চেরা চিকন বাঁশের কলম, দোয়াত ভর্তি কয়লা গুড়োর কালি আর মুছবার জন্য একটুকরা ন্যাকড়া- তাবত জিনিস নিয়ে সেইদিন, বাবু আল মামুন খান জীবনের প্রথম বিদ্যালয়ে পা রেখেছিল। জ্ঞানের সন্ধানে আলোকিত মানুষ হবার জন্য সেই ছিল প্রথম পদক্ষেপ! নিজে আলোকিত হও- জগতকে আলোময় করো।
The First Move To Enlighten The World?
প্রথম 'অ' অক্ষরটি আমার লেখা হলো- আমি বিস্ময় নিয়ে সেদিকে তাকিয়ে রইলাম... দীর্ঘক্ষণ! সৃষ্টির আনন্দে প্রগলভ হলাম! গলে নরম মোম হলাম! বক্ষে অপার বেদনামিশ্রিত আনন্দও অনুভব করলাম!
আমি অক্ষরের প্রেমে পড়ে গেলাম।
পাঠশালার সেই বালক আজ জীবনের পঁয়তাল্লিশ বছরে এসে, নিজের আজন্ম লালিত স্বপ্নকে সাকার করতে যাচ্ছে!! নিজের অনুভূতিগুলো অক্ষরের রুপে- ছুঁয়ে -দেখে- মেপে- বুঝে অনুভব করতে চাচ্ছে।
মনের খোরাক গ্রুপের ছোট ভাই Mamun Islam অনেকগুলো রাত জেগে প্রচ্ছদটির পরিকল্পনা করেছে- খসড়া প্রচ্ছদ বানিয়ে দিয়েছে। রাত- বিরাতে ওকে অনেক বিরক্ত করেছি। মনের খোরাক গ্রুপের অন্য ভাইয়াদেরকেও জ্বালিয়েছি। মামুন সহ গ্রুপের সবাইকে অনেক ভালোবাসা জানাই।
মোস্তাফিজ কারিগর ভাই মামুনের খসড়া প্রচ্ছদটি সামনে রেখে, নিজের মনের মাধুরী মিশিয়ে, সুদৃশ্য প্রচ্ছদটি করেছেন। ধন্যবাদ মোস্তাফিজ কারিগর ভাইকে মূল্যবান সময় আমার জন্য ব্যয় করায়।
কুঁড়েঘর প্রকাশনীর সত্তাধিকারী শামিম রহমান আবির ভাই, তার চাকুরি এবং ব্যবসার শত ব্যস্ততার মধ্য দিয়েও আমাকে সময় দিয়েছেন- দিচ্ছেন। প্রচ্ছদটির সার্বিক তত্তাবধান করেছেন - আন্তরিক ধন্যবাদ আপনারও প্রাপ্য।
দিলাম ভাই! অনেক... অনেক অনেক!
আমার সকল ফেসবুক এবং ব্লগের বন্ধুদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা- আমার লিখাগুলো সময় নিয়ে পড়ছেন- সুন্দর মন্তব্যের দ্বারা নিরন্তর আমাকে উতসাহ জুগিয়ে যাচ্ছেন- আমাকে নবীন লেখকে পরিণত করেছেন... আমি আমার অন্তরের নিখাদ ভালোবাসায় আপনাদের হৃদয় ছুঁয়ে যাচ্ছি!
সবসময়ে ভালো থাকুন। হৃদয়বান পুরুষ এবং হৃদয়বতী নারীর সবটুকু গুণে গুণান্বিত হয়ে উঠুন। আনন্দে থাকুন।
আমার জন্য দোয়া করবেন- মৃত্যুশয্যায়ও আমি যেন, আমার জীবনের শেষ অণুগল্পটি লিখে যেতে পারি।
ধন্যবাদ কুঁড়েঘর প্রকাশনীর সাথে সংশ্লিষ্ঠ সকলকে- আমাকে 'শিল্পের বড়াই' করার জন্য এরকম উপযুক্ত একটি প্ল্যাটফর্মে প্রবেশাধিকার দেয়ায়।
ধন্যবাদ সবাইকে।
বিষয়: বিবিধ
৯৯৫ বার পঠিত, ২০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
কূঁড়েঘর কোন শর্তে ছাপাতে রাজী হয়েছে তা যদি বলতেন উপকার হত৷ আমার কোরআনের অনুবাদটি এক প্রকাশককে খরচের অর্ধেক টাকা দিয়ে দেঢ় বৎসর অপেক্ষা করছি৷ কোন খবর নাই৷ ই মেইলে দুইবার জানতে চেয়ে উত্তর পাইনি অথচ তাতে আমার কোন লাভ চাইনি৷ সব উনার আমি শুধু প্রকাশ ও কোরআনের প্রচার চাই আর সাথে অল্প কয়েকটি কপি যা পরিচিত জনদের ফ্রী দেবার ইচ্ছা৷ধন্যবাদ৷
আমার প্রকাশক প্রতি ফর্মা পাঁচ হাজার টাকা হিসাবে নিয়েছেন।
ভালো থাকুন।
যাই হোক, বই প্রকাশের আনন্দটা কি আপনি বুঝতে পারছেন। আমাদের স্বপ্নই থেকে গেল।
ধন্যবাদ, ভাল লাগল। আশা করি নিয়মিত লিখবেন।
হ্যা, আনন্দ আমি অনুভব করছি। সবাই একই আনন্দে প্রগলভ হক কামনা করি।
ভালো থাকুন।
ভালো থাকুন।
আপনি কেমন আছেন?
ধন্যবাদ।
ইনশা আল্লাহ, পড়বেন। ভালো থাকুন।
অপেক্ষার প্রহর শেষ হবে কবে আমার ক্ষেত্রে জানি না এখনো! আপনার লেখা মুগ্ধ পাঠক আমি! বই-এর ঘ্রাণ শুকে শুকে দেখার অপেক্ষা রয়েই যাচ্ছে!
ইনশা আল্লাহ দেশে এসে আপনার হাত থেকে সংগ্রহ করেই পড়বো পুরো বই!
সাফল্যের স্বর্ণ শিখরে পৌছে যান আপনি- অন্তর থেকে মহান পরওয়ারদিগারের কাছে এই-ই দুয়া!
অভিনন্দন অজস্র প্রিয় মামুন ভাই!
ইনশা আল্লাহ। আসুন দেশে। অপেক্ষায় রইলাম।
শুভেচ্ছা রইলো।
অাচ্ছা অটোগ্রাফ হবে না ফটোগ্রাফ!?
আর পেটভরে সমালোচনা করবো।
আসছি কিন্তু!!
সব হবে- সেলফি-কুলফি, অটোগ্রাফ দেয়া-নেয়া, আড্ডা- সবই।
ভালো থেকো ভাই।
মন্তব্য করতে লগইন করুন